সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

Ad Code

"মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধের সম্ভাবনা"


 রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে ট্রেন চলাচল বন্ধের আশঙ্কা

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের জটিলতা নিরসনে ব্যর্থ হওয়ায় কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। তাদের এই কর্মসূচি সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাত ১২টা থেকে কার্যকর হতে পারে, ফলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কর্মসূচিটি পালন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।

রানিং স্টাফদের দাবি ও অসন্তোষ
রানিং স্টাফরা (চালক, সহকারী চালক, গার্ড, টিকিট চেকার) দীর্ঘদিন ধরে মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের অভিযোগ, ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় মাইলেজ সুবিধা সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধার ক্ষেত্রে রানিং অ্যালাউন্স বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর ফলে রানিং স্টাফদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।


তারা দাবি করেন, ১৬০ বছর ধরে মাইলেজ সুবিধা তাদের পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু এই সুবিধা হঠাৎ বাতিল করায় তারা আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

পূর্বের আন্দোলন ও সরকারের প্রতিশ্রুতি
গত তিন বছরে রানিং স্টাফরা একাধিকবার কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন আন্দোলন করেছেন। ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল তাদের কর্মবিরতির ফলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল তাদের দাবি মেনে চিঠি প্রত্যাহার করে নেয়। তৎকালীন রেলমন্ত্রী এবং রেলওয়ের মহাপরিচালক সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।

তবে, ২০২৩ সালের জুন মাসে অর্থ মন্ত্রণালয় পুনরায় তাদের দাবির প্রতি আপত্তি জানালে সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়। রানিং স্টাফদের অভিযোগ, তাদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

রানিং স্টাফদের বক্তব্য
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান জানান, "আমরা ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চালানো বন্ধ রাখব। আমাদের দাবি ১৬০ বছরের পুরনো নিয়ম অনুযায়ী মাইলেজ সুবিধা পেনশনের অংশ হিসেবে বহাল রাখতে হবে। এর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্টীকরণ চিঠি প্রয়োজন।"

তিনি আরও বলেন, "বর্তমানে রেলওয়ের ১,০৩৬ জন রানিং স্টাফ রয়েছে, যেখানে প্রয়োজন ছিল ২,০৩৬ জন। জনবল সংকটের কারণে আমাদের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়, যা আমাদের মাইলেজ সুবিধাকে বাড়ায়। এটি আমাদের অধিকার, এবং এই সুবিধা ছাড়া কাজ করা সম্ভব নয়।"

সরকারের প্রতিক্রিয়া
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম জানান, "রানিং স্টাফদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা চাই তারা আন্দোলনে না যান এবং সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব হয়।"

রানিং স্টাফদের এই কর্মসূচি কার্যকর হলে সারা দেশে ট্রেন চলাচলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এখন সবার নজর থাকবে আলোচনার ফলাফল ও সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

Post a Comment

0 Comments