টাকার বিনিময়ে প্রাথমিকের বই বিতরণ
নতুন বছরে নতুন বই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা আর বই হাতে পেয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠবে তারা। সেজন্য নতুন পোশাক পরে নতুন বই নিতে তাদের অধ্যরনরত বিদ্যালয়ে গিয়েছিল। অথচ কাউকে ২০০ করে টাকা দিয়ে নতুন বই নিতে হয়েছে, আবার কেউ কেউ টাকা দিতে না পারার কারণে বঞ্চিত হয়েছে নতুন বই পাওয়া থেকে।
অভিযোগ উঠেছে, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন বই বিতরণের সময় ২০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লিলি পারভিন ৩৬ জন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে মোট সাত হাজার দুইশত টাকা নিয়েছেন। অপরদিকে, টাকা না দেওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী এখনো নতুন বই পায়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মাঠে জড়ো হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঁচ-সাতজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষিকা ২০০ টাকা করে নিয়ে নতুন বই দিয়েছেন। কোনো রসিদ দেননি। তারা প্রথম দিন বই নিতে এলে টাকা না দেওয়ায় তাদের বই দেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয়ের সবুজ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সারাদেশের শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারি নতুন বই পেয়ে আনন্দ করেছে। অন্যদিকে, বিষ্ণুপুর সরকারি বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী এ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকার বিনামূল্যে বই দিচ্ছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা লিলি বেগম টাকা ছাড়া বই দিচ্ছেন না।
![]() |
প্রধান শিক্ষিকা লিলি পারভিন। |
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা লিলি পারভিন জানান, ৩৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। নতুন বইয়ের জন্য কোনো টাকা নেয়া হয়নি। বই উৎসব পালন করেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই দিয়েছি। তাছাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে এই টাকা নেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন্দ ও অরণ্যের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, বই দেওয়ার দিন ম্যাডাম ২০০ টাকা নিয়ে আসতে বলছিলেন। তাই ২০০ টাকা দিয়ে বই নিয়ে গেছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার ছাত্রছাত্রীদের বই দিচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সরকারি বই বিতরণ নীতিমালা অনুযায়ী বিতরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো রকম অর্থ নেয়ার সুযোগ নেই। উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো মিজানুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছি তদন্ত করার। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান জানান, আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
0 Comments