শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমি ও আমার মেঝ ভাই মো. সাহেব আলী খান জেলা ও দায়রা জজ আদালত বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় তার চেম্বারে গেলে তিনি আমাকে ওই কুকুরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আমি তাকে বলি, কুকুরটি আমার না এবং কুকুরটি কার তাও আমি জানি না। তখন তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তার সেরেস্তায় থাকা একটি রশি দিয়ে আমার হাত পিঠমোড়া করে বাঁধেন এবং আমাকে একটি চেয়ারের উপর হামু দিতে বলেন। আমি তার কথা মতো চেয়ারের উপরে হামু দিলে তিনি একটি কাঠের রুল দিয়ে আমার পশ্চাৎদেশসহ পিঠে আনুমানিক ৩০টি আঘাত করেন। এতে আমার পশ্চাৎদেশসহ পিঠে রক্তজমাট জখম হয়। তখন সুমন হোসেন বলেন যে, ওই কুকুরটি যদি এলাকায় আবার দেখা যায় এবং আমি যদি এই বিষয় নিয়ে কাউকে জানাই তবে তিনি আমার নামে মামলা দিয়ে আমাকে জেল খাটাবেন। পরে আমার ভাই আমাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আফজাল খাঁ বলেন, আমি গরীব মানুষ। কখনো ভ্যান চালাই আবার কখনো শ্রমিকের কাজ করি। আমার বাড়ি থেকে সুমন স্যারের শ্বশুরবাড়ি আধা কিলোমিটার দূরে। তার স্ত্রীও আমাকে চেনে। প্রথমে আমার বাড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে আমাকে দেখা করতে বলে। শনিবার দুপুরে আমি থানায় আসি। থানা থেকে পুলিশ জানাই সুমন স্যার আমাকে দেখা করতে বলেছে। তখন আমি এলাকার জামাই হিসেবে তার বাসায় যায়। বাসার দরজা খুলেই আমাকে গালাগালি করে বলে বিকেল চারটায় আদালতে আয়। আদালতে গেলে তার খাস কামড়ায় ডেকে আমার হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে পিটিয়েছে। এ ঘটনায় আমি সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছি। আমি বিচার চাই। তার কাছ থেকে মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। কিন্তু সে এমন করলে মানুষ যাবে কোথায়।
আফজাল খাঁর ভাই মো. সাহেব আলী খান বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে রাজবাড়ী সদর থানার এসআই আসাদ আমার ভাই আফজালকে খুঁজতে আমাদের বাড়িতে যান। তবে সেসময় আফজাল বাড়িতে ছিলো না। শনিবার সকালে আমি আমার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে থানার এসআই আসাদের কাছে গিয়ে আমার ভাইকে খোঁজার বিষয়ে জানতে চাই। তখন এসআই আসাদ বলেন ম্যাজিস্ট্রেট সুমন স্যার তাকে পাঠিয়েছিলেন। সুমন স্যারের বাসা হয়ে আদালতে তার চেম্বারে গেলে প্রায় দুই ঘণ্টা পর আমার ভাই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে বাইরে বের হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করে। এ সময় আমি আমার ভাইকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা জন্য ভর্তি করি। পরে থানায় গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করি। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের মোবাইলে ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাহলে আপনার বিরুদ্ধে একজন ভ্যানচালক কেন অভিযোগ করবে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, রোববার সকালে আমার অফিসে আসেন। সরাসরি বিস্তারিত জানাবো। রোববার আদালতে গিয়ে তার ফোনে কল দিলেও ধরেনি, আবার মেসেজ করলেও কোনো উত্তর দেন নি।
0 Comments