
রাজশাহীতে ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে টেন্ডার বাক্স লুট
রাজশাহীর পবা উপজেলায় ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদে এই ঘটনা ঘটে।
টেন্ডার বাক্স লুটের সময় স্লোগান
স্থানীয় যুবদলের এক নেতা জানান, টেন্ডার বাক্স লুটের সময় হামলাকারীরা ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিচ্ছিলেন। তিনি ও তার সমর্থকরা দরপত্র জমা দিতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন।
কীভাবে ঘটল হামলা?
পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সোমবার ছিল দরপত্র জমার শেষ দিন।
ইউএনও কার্যালয়ের নিচতলায় টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয়। এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছুরিকাঘাতে যুবদল নেতা আহত
হামলার সময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামে এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন। তিনি রাজশাহী নগরের শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যুবদল নেতার বক্তব্য
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবদল নেতা বলেন,
“খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে এই হামলা হয়। আমরা দরপত্র জমা দিতে গেলে প্রথমে গেটের কাছে বাধা দেওয়া হয়। এরপরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের ওপর হামলা হয়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে দরপত্র লুট করে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন,
“হামলার সময় তারা ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।”
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এই হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে এক স্থানীয় জামায়াত নেতা ও এক সাবেক শিবির নেতার নাম উঠে এসেছে। তবে অভিযুক্ত সাবেক শিবির নেতা বলেন,
“আমি দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম, তবে লুটের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি যুবদল ও বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব।”
পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ওসি মাসুমা মোস্তারিন বলেন,
“গুলি ছোড়া হয়েছে, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে, বাক্সটি শুধু পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে, সেইভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ জানান,
“সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দরপত্র জমার সময় নির্ধারিত ছিল। সকাল থেকে কিছু দরপত্র জমাও পড়ে। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এরপর টেন্ডার বাক্স ভেঙে দরপত্র লুট করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।”
দরপত্রের ভবিষ্যৎ কী হবে?
দরপত্র জমার পরবর্তী সময় সম্পর্কে ইউএনও বলেন,
“সাধারণত দরপত্র জমার জন্য একাধিক সময় নির্ধারণ করা থাকে। আগামী তারিখ নির্ধারিত আছে ৬ ও ৭ এপ্রিল। তাই ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল হবে না।”
0 Comments